জাতীয় সংসদের হুইপ ও শেরপুর-১ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য মো. আতিউর রহমান শেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণায় অংশ নিয়ে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। শেরপুর জেলা পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ‘বিদ্রোহী’ চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. হুমায়ুন কবীর আজ বুধবার বিকেলে সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।
আজ বিকেলে শহরের খরমপুর এলাকায় হুমায়ুন কবীরের নির্বাচনী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এতে লিখিত বক্তব্যে হুমায়ুন কবীর বলেন, নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার দায়িত্ব নির্বাচন কমিশন এবং জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তার। কিন্তু ক্ষমতাসীন দলের হুইপ মো. আতিউর রহমান নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর থেকেই ষড়যন্ত্র করে আসছেন। হুইপ আতিউর তাঁর পছন্দের দলীয় প্রার্থী চন্দন কুমার পালকে (আনারস প্রতীক) বিজয়ী করার জন্য ভোটারদের টিআর প্রকল্পের বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে প্রচারণা চালাচ্ছেন। একই সঙ্গে জেলার প্রতিটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের ডেকে এনে কালো টাকা বিলির মাধ্যমে ভোটারদের তাঁর (প্রার্থী চন্দন পাল) পক্ষে নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হুমায়ুন কবীর আরও বলেন, জেলার সব শ্রেণির মানুষের মধ্যে তাঁর মোটরসাইকেল প্রতীকের জয়ের বিষয়ে যে জোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, তা সর্বজনবিদিত। তাঁর বিজয় নিশ্চিত জেনে; এই বিজয়কে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য হুইপ আতিউর বিভিন্ন ইউপির চেয়ারম্যান, সাধারণ সদস্য ও সংরক্ষিত নারী সদস্যদের টাকা দিয়ে এবং ভোট না দিলে কোনো বরাদ্দ দেওয়া হবে না বলে হুমকি দিচ্ছেন।
জেলা আইনশৃঙ্খলা সভায় যোগ দেওয়ার নামে হুইপ আতিউর মুঠোফোনের মাধ্যমে নিজ বাড়িতে ডেকে এনে হুমকির মাধ্যমে ভোটারদের চাপ দিচ্ছেন, যা সরাসরি নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন বলে হুমায়ুন অভিযোগ করেন। অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের স্বার্থে হুইপ আতিউরকে শেরপুর এলাকা ত্যাগ করার জন্য তিনি (হুমায়ুন) দাবি জানান।
জেলা পরিষদ নির্বাচনের ভেটারদের ভয়ভীতি দেখানো এবং সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ভোট চাওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করে হুইপ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আতিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে ও তাঁকে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য হুমায়ুন তাঁর (আতিউর) বিরুদ্ধে এসব মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভিত্তিহীন অভিযোগ করেছেন। তিনি তাঁর নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন এবং দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কখনোই কোনো প্রচারণায় যাননি।
হুইপ আতিউর আরও বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করে ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থী হওয়ায় দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে দলের গঠনতন্ত্রের ৪৭ (১১) ধারা মোতাবেক হুমায়ুন কবীরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে জেলা আওয়ামী লীগসহ দলের সর্বস্তরের পদ থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
0 Comments